লেবুপানি পানের সাতটি উপকারিতা
করোনাকালে সুস্থ থাকাটাই বড় কথা। আর সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। নিশ্চয়ই এতদিন ধরে শুনে আসছেন ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই ভিটামিন সি’র বড় যোগানদাতা কিন্তু লেবু।
লেবু সাধারণত মানুষ খাবারদাবারের সঙ্গে খায়। তাতে আর কতটুকু ভিটামিন সি শরীরে ঢোকে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে লেবু খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। তা কীভাবে বাড়াবেন? এর সর্বোত্তম পন্থা হলো পানিতে লেবু চিপে সরবত করে খাওয়া। তবে এই সরবতে চিনি না নিলেই বেশি উপকার।
লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই লেবুপানি তৈরিতে ছোট হলে একটা লেবুর রস ৮ আউন্স উষ্ণ বা স্বাভাবিক পানিতে মেশান। স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরির জন্য ফিল্টারের পানি এবং টাটকা লেবু ব্যবহার করা জরুরি।
নিচে লেবুপানি পানের সাতটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো :
শরীর আর্দ্র রাখে
শরীর আর্দ্র রাখার সর্বোত্তম উপায় পানি পান করা। কিন্তু অনেকের পানি পানে অনীহা রয়েছে। তাদের জন্য পরামর্শ- পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে পর্যাপ্ত পানি পান করা হবে এবং শরীর আর্দ্র থাকবে। সেই সঙ্গে লেবু শরীরের টক্সিক পদার্থ বার করে দেয়। তাই যেকোনো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। শরীরের অনেক জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে লেবুপানি।
ভিটামিন সি’র ভালো উৎস
লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষগুলোকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি ঠান্ডা, সর্দি থেকে মুক্তি দেয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ভিটামিন সি এর চাহিদা ৬৫-৯০ মিলিগ্রাম। একটি লেবু থেকে ১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। দিনে দুই থেকে তিন বার লেবুপানি আপনি খেতেই পারেন। তাতে দেহে ভিটামিন সি’র চাহিদা পূর্ণ হবে।
ওজন কমায়
গবেষণায় দেখা গেছে যে, পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর ভালো উৎস লেবু। এটি ওজন বাড়তে দেয় না এবং স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদরা বলেন, যারা ওজন কমাতে চান, তাদেরকে লেবুর রস হালকা গরম পানির সঙ্গে খেতে হবে।
ত্বক সুরক্ষা করে
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। সূর্যের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
হজমে সহায়ক
প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। গরম বা উষ্ণ লেবু পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়াকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করে। আর খালি পেটে লেবুপানি পানের ফলে লিভার পরিষ্কার থাকে। এতে পরবর্তীতে খাবারগুলো ভালোভাবে হজম হয়। কারও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে, তা থেকেও পরিত্রাণ পেতে পারেন।
নিশ্বাসে সজীবতা আনে
খাওয়ার পর অনেক সময় মসলা- পেঁয়াজ, রসুন বা মাছের গন্ধ মুখে লেগে থাকে। মুখের দুর্গন্ধ বা নিশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার পর এক গ্লাস লেবুর পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে সকালে পান করলেও ফল পাওয়া যায়। এছাড়া লেবু পানিতে কুলকুচি করলেও মুখ সতেজ ও সুস্থ থাকে।
কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধ করে। এই সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর প্রতিরোধের পাশাপাশি জমে থাকা পাথর বের করতেও সাহায্য করে।
লেবুপানি খেতে পারেন দিনের যে কোনো সময়, খালি পেটেও। তবে লেবুর অ্যাসিডিক মাত্রা বেশি বলে অনেক চিকিৎসকই খালি পেটে খেতে নিষেধ করেন। সেক্ষেত্রে হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটি আক্রমণ করতে পারে না। লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও তার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আপনাকে বাঁচাতে পারে অনেক অসুখ থেকেও।