জমে উঠছে মতলব উত্তরের কোরবানির পশুর হাট
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠতে শুরু করেছে মতলব উত্তর উপজেলার কোরবানির পশুর হাটগুলো। এবার এই উপজেলায় দুটি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি বসেছে ১৬টি অস্থায়ী পশুর হাট। তবে এ বছর গোখাদ্যের মূল্য বাড়ায় পশু লালনপালনে খরচ বেশি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পশুর উপযুক্ত মূল্য পাবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা।
মঙ্গলবার (১১জুন) ছিল এই উপজেলার পুরনো পশুর হাট কালির বাজারের পশুর হাটের দিন। এদিন সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, পছন্দের গরু কিনতে হাটে ভিড় করছেন ক্রেতারা। হাটে পর্যাপ্ত দেশি গরু উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, দাম খুব কম না হলেও সাধ্যানুযায়ীই চলছে বেচাকেনা। অবশ্য উভয়পক্ষেরই অভিমত, ঈদের দুই-তিনদিন আগে শুরু হবে মূল বেচাকেনা।
এবার কোরবানির পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সহনীয় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে লালন করা গরুর পাশাপাশি ব্যাপারীরা অন্যান্য জেলা থেকেও গরু এনে তুলছেন হাটে। হাটের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
উপজেলার গালিমখাঁ গ্রাম থেকে আসা গরুর খামারি মো. মিজানুর রহমান জানান, তিনি দুটি ষাঁড় বিক্রি করতে বাজারে এসেছেন। গোখাদ্যের দাম বেশি, এ কারণে গরুর পেছনে খরচও হয়েছে বেশি।
তিনি আরো বলেন, আমি আজ যে গরুটি বাজারে এনেছি তার দাম উঠেছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর ২০ হাজার টাকা বেশি উঠলেই বিক্রি করব।
চরচাষী এলাকা থেকে গরু বিক্রি করতে আসা মোবারক হোসেন বলেন, আমার খামারে ১৫টি গরু রয়েছে। সব গরুই হাটে এনেছি। তিনটি গরু বিক্রি করেছি। আশা করছি বাকি গরুগুলোও বিক্রি করতে পারবো।
দাউদকান্দি উপজেলায় মোল্ল্যা কান্দি ব্যাবসায়ী মো. আব্দুল হক মিয়া বলেন, আমি আজকে বাজারে গরু এনেছি ৮টি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন তাতে আমার খরচও উঠবে না, লাভ তো দূরের কথা। হাতে সময় আছে, আরো দেখে তারপর ছাড়বো।
ছেংগারচর পৌরসভার খামারি মো: নজরুল সরকার বলেন কুরবানীকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে ১০টি ষাড় গরু মোটাতাজা করেছি। দেখেশুনে বুঝে বিক্রি করব।
খাগুরিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। দাম একটু বেশি হলেও আমার পছন্দসই হয়েছে।
হাফানিয়া গ্রামের সুমন মোল্লা বলেন, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছি। গরু অনুসারে দাম ঠিকই আছে বলে মনে হয়।
এদিকে বাজারে খাসি বা ছাগলও উঠেছে প্রচুর। সামর্থ্য অনুসারে অনেকে খাসি কিনছেনও।
খাসি বিক্রেতা আ. কাদির বলেন, ১৬টি খাসি এনেছিলাম, ৭টি বিক্রি হয়ে গেছে। বাজার ভালো আছে। আশা করছি, বাকিগুলোও ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
কালির বাজার পশুর হাট পরিচালনা কমিটির মো. মিলন মেম্বার বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারীরা ঈদুল আযহার উপলক্ষে কালিবাজারে গরু নিয়ে আগেই মাঠে চলে আসেন। এই বাজারের একটি সুনাম আছে। এই হাটে আসা সকল ক্রেতা বিক্রেতা লেনদেন ব্যাংকে করার সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের কাউন্টারে বসানো হয়েছে জাল নোট শনাক্ত করা মেশিন। হাসিল সরকারি নির্ধারিত দামের মধ্য দিয়েই হাসিল নেওয়া হচ্ছে। বাজারটির পরিবেশর দিকে আমরা নজর দিয়েছি। বাজারে ক্রেতা বিক্রেতা যাতে ঠিকভাবে পশু বেচাকেনা করতে পারে আমরা সে দিকে কমিটির লোকজন দেখাশোনা করছে।