ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার কলেজ অধ্যক্ষ ৫ মাস যাবত বরখাস্ত
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় কর্তব্যে অবহেলা দেখিয়ে সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদ পারভেজকে পাঁচ মাস ধরে সাময়িক বরখাস্ত করে রেখেছে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক গবর্নিং বডির সভাপতি এমএ ওয়াদুদ। তিনি চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন, তার ছোট ভাই ছিলেন এমএ কুদ্দুস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, আরেক ভাই সাজেদুল হোসেন বাবু বাতেন ছিলেন ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।
জানা যায়, উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে এমএ ওয়াদুদ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১৯৯৭ সালে সুজাতপুর গ্রামে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন। সেই থেকে দীর্ঘ ২৭ বছর প্রভাব খাটিয়ে তিনি কলেজটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মো. মাসুদ পারভেজ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখে সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ যোগদান করেন তিনি। দীর্ঘদিন কলেজটি পরিচালনা করে আসছে তিনি। কিন্তু বিপত্তি হয় কলেজটির সাবেক সভাপতির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোন কাজ করা। পুরো কলেজটির সমস্ত সিদ্ধান্ত একাই নিতেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক গভর্নিং বডির সভাপতি এমএ ওয়াদুদ। তার আঙ্গুলের ইশারায় চলত কলেজটি। প্রতি মাসে কলেজটির উন্নয়ন ও বিভিন্ন খাতে ভাউচারের মাধ্যমে তুলে নিতেন মোট অংকের টাকা। তার কথায় অমত হওয়ায় চলতি বছরের মে মাসের ১৫ তারিখে দায়িত্বে অবহেলার কারণ দেখিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করেন কলেজে অধ্যক্ষ মো. মাসুদ পারভেজ কে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় কলেজটির সহকারী অধ্যাপক সুনীল চন্দ্র সরকারকে। তিনি ১ মাস দায়িত্ব পালনের শেষে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব রদবদল করে দেওয়া হয় সহকারী অধ্যাপক সুব্রত দাসকে।
এ বিষয়ে কলেজটির অধ্যক্ষ মো. মাসুদ পারভেজ জানান, গত এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখে একটি কারন দর্শানোর নোটিশের মাধ্যমে আমাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে গত ১৫ মে পুনরায় সভায় আমাকে পেশাগত দক্ষতার ঘাটতি দেখিয়ে আরো ২ মাস পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ২৯ জুন আমার শারীরিক অসুস্থতার কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব হস্তান্তর করে সহকারী অধ্যাপক সুনীল চন্দ্র সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। যে কারণ দেখিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে, এই কারণে তিনি আমাকে বরখাস্ত করতে পারে না।
এ বিষয়ে সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. (অব.) এমএ ওয়াদুদ বলেন, আমাদের কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদ পারভেজের অনিয়মের কোন শেষ নেই। বিভিন্ন অনিয়মের কারনে তাকে সংশোধন হওয়ার জন্য ২ মাসের জন্য গবর্ণিং বডির আলোচন সভায় সকলের সম্মতিক্রমে সাময়িক দরখাস্ত করেছিলাম। তারপরে দেশে সরকার পরিবর্তনের পরে সরকারি বিধি অনুযায়ী আমাকে সভাপতি দায়িত্ব থেকে সরে আসতে হয়েছে।