সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের তিন রেমিট্যান্সযোদ্ধার মৃত্যু
পপুলার বিডিনিউজ ডেস্ক চাঁদপুর
Link Copied!
সৌদি আরবের আফিফ শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের তিন রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের পরিবারের মাঝে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারের দাবী, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত তাদের মৃতদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হোক।
বৃহস্পতিবার সারাদিন কাজ শেষে চাঁদপুরের তিন রেমিট্যান্স যোদ্ধা বাসায় যাওয়ার পথে সৌদি আরবের আফিফ শহরের বিশ্ব রোডে দুই মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চাঁদপুরের হাইমচরের কমলাপুর গ্রামের রিফাত ও দক্ষিণ আলগী গ্রামের সাব্বির এবং ফরিদগঞ্জের কনট্রেকটার সবুজ হোসেন।
শুক্রবার সকালে তাদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় কান্না-কাটি। চার বছর আগে সৌদি আরব পাড়ি দেয়া রিফাত ঈদের পর দেশে আসার কথা ছিল। রিফাত আসবে ঠিকই, তবে জীবিত নয়, মৃতদেহ। এমন বিলাপে কান্নাকাটি করছে তার বোন আর মা-বাবা।
রিফাতের বাবা দেলোয়ার হোসেন জানান, ছেলে দেশে আসার কথা। নতুন আকামা করবে। কত স্বপ্ন ছিল। সব শেষ হয়ে গেলো। ছেলের শোক কিভাবে সইবো।
রিফাতের খালাতো ভাই সাব্বির হোসেন। তারা কনট্রাকটর সবুজ হোসেনের সাথে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতো।পরিবারের দাবী সাব্বিরের মৃতদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করার।
সাব্বিরের বাবা ইসমাইল হোসেন বলেন, কোন টাকা পয়সা চাই না। ছেলেটারে দেখতে চাই। নিজের হাতে দাফন করবো।
তার স্কুলে পড়ুয়া বোন কান্নার বিলাপে বলেন, ভাই দেশে আইবো। রোজার ঈদ করবে। আমাগো কতো আনন্দ হইবো। আমাকে নিয়েও ভাইয়ের কত স্বপ্ন ছিল। এখন আর কিছুই হলো না।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে সৌদি আরবে নেয় কন্ট্রাক্টার সবুজ হোসেন। দীর্ঘ বছর সৌদি প্রবাসী। নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করে বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় কবলিত হন। তার বাড়ী ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২ নং পশ্চিম চরদুখিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিশ কাটাখালী গ্রামে। মা-বাবা ও চার ভাই -বোনের সংসার। মৃত্যুর খবরে চলছে শোকের মাতম।
সবুজের বাবা জামাল ফকির। তিনি সরকারের কাছে সন্তানকে দেশে আনার প্রক্রিয়া করার আহবান জানিয়ে বলেন, ১৮ বছর ছেলে বিদেশ করে। দুই নাতিন আর বউমাকে নিয়ে গেছে। এখন তো আমাকে পরিবারের আলোর প্রদীপ আর নেই। কে দেখাশোনা করবে এতো বড় পরিবারের।
সরকারের কাছে রিফাত, সাব্বির ও সবুজের পরিবারের শেষ আকুতি তাদের মৃতদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করার। তাদের তিন পরিবার ও এলাকায় চলছে শোকের মাতম।