চাঁদপুরে রাজত্ব করছে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ
পপুলার বিডিনিউজ রিপোর্ট
Link Copied!
চাঁদপুরে দেখা নেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ জেলেরা ফিরছে শূন্য হাতে। ফলে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে এখন রাজত্ব করছে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ। চাঁদপুর মাঠঘাটে ইলিশে ভরপুর দেখা গেলেও মূলত এসব চাঁদপুরের ইলিশ নয়। বরিশাল, ভোলা এবং সন্দীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশেই সয়লাব এখন চাঁদপুরের ইলিশের বাজার।
চাঁদপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই চাঁদপুরের দক্ষিণ উপকূল নদী থেকে ট্রলারবোঝাই করে আসছে বিভিন্ন সাইজের ইলিশ। সড়ক পথেও ট্রাক, মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে দক্ষিণাঞ্চলীয় ভোলা, হাতিয়া, চর আলেকজান্ডার, চর ফেশন, লক্ষীপুরের কমলনগর থেকে আসছে বিপুল পরিমাণ মাছ। শ্রমিকরা ঘাটে আসা ইলিশ টুকরিতে ভরে আড়তে তুলে বড় বড় স্তূপ করে সাজিয়ে রাখছিলেন। যা পাইকারদের হাত বদল হয়ে ককসেটের প্যাকেটজাত হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে এখানে আসা বেশিরভাগ খুচরো ক্রেতারা চাঁদপুরের ইলিশ ভেবে এসব ইলিশ কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ বন্দুকসি জানান, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় আসানুরুপ ইলিশ ধরা পড়ছে না। যে অল্পসংখ্যক ইলিশ ধরা পরে তা বিক্রি হয় চওড়া দামে।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ চাঙ্গা রাখছে চাঁদপুর মাছঘাট।বরিশাল, ভোলা এবং সন্দীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের এইসব ইলিশ চাঁদপুরের স্থানীয় বাজারে লোকাল ইলিশ বলে বিক্রি হয়। এতে দামও বেশি পাওয়া যায়। চাঁদপুর মাছঘাটের পাইকারি আরতদার ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী জানান, চাঁদপুরের নদীতে ইলিশের দেখা না পাওয়ায় জেলেদের পাশাপাশি আমরাও হতাশ। কারণ প্রতিটে জেলেকে আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা দাদন দিয়ে রেখেছি। এখন দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের জন্যেই আমরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছি। মাছঘাটের ব্যবসায়ীরা কর্মব্যস্ত সময় পার করছি। মাছ ঘাটের শ্রমিক বাবুল জানায়, এই ঘাটে ৫ থেকে ৬শ’ শ্রমিক কাজ করে থাকে। প্রতিদিন শতশত মন ইলিশ আসে উপকূল থেকে। তবে চাঁদপুরের ইলিশ খুব একটা আসে না। এদিকে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুরে নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ৫২ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে অধিকাংশ জেলেই পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ অন্য মাছ আহরণ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে।
তারা মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষায় দুই বারের অভয়াশ্রমকালীন সময়ে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলেও মৌসুমি কিছু অসাধু জেলে রাতের আঁধারে অবাদে মা ইলিশ ও জাটকা নিধন করে থাকে। যার ফলে ভরা মৌসুমেও চাঁদপুরের নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। তবে আশার কথা জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটে কর্মরত ইলিশ গবেষক ড. মো.আনিসুর রহমান। তিনি বলেন,‘ ইলিশের মৌসুম সামনে (আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে) আসছে। এবারের ইলিশ হবে সুস্বাদু। কারণ আমরা নদীর পানি পরীক্ষা করে দেখেছি এবার করোনার কারণে দীর্ঘসময় লকডাউনের ফলে নদীতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় নদীর পানির দূষন কমে গেছে। তাই ইলিশসহ অন্যান্য মাছ বিচরণ করতে পেরেছে অনায়াসে, নির্ভয়ে। ফলে মাছের খাদ্য আহরণের জন্য নদীর অবস্থা বেশ ‘কনজেনিয়েল কনডিশন’ বিধায় এবারের ইলিশ হবে বেশি সুস্বাদু|