রাজনীতির ময়দানে এক যুদ্ধার নাম প্রলয়
একজন প্রলয় রঞ্জন ভদ্র। যে ছিলো প্রজন্মের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের একটা আস্থার ঠিকানা। ছাত্রলীগের উপর যেখানে হামলা সেখানেই ছিলো প্রলয় ভদ্র। যে ছিলো সর্বদা সম্মুখ ভাগের যোদ্ধা। আমরা ছাত্রলীগ থেকে মিঠুনদাকে বিদায়ের পর ভেবেছিলাম ছাত্র রাজনীতিতে নেতৃত্বের একটি শুণ্যতা সৃষ্টি হবে। কিন্তু প্রলয়দা সেই শুণ্যতা অনেকটাই গুছিয়ে দিয়েছিলেন।
এই হাজিগঞ্জের মাটিতে অনেকেই খুব সস্তায় ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক হতে পারলেও প্রলয় ভদ্রের জন্য যা ছিলো অনেক দুঃস্থর। নেতৃত্ব দেয়া বা দায়িত্ব নেবার শতভাগ যোগ্যতা থাকা সত্বেও প্রলয়দাকে বারংবার হেরে যেতে হয়েছে এই হাজিগঞ্জের মাটির কাছে। যেইনা হাজিগঞ্জে ছাত্রলীগের সম্মেলন আহ্বান করা হতো শুরু হয়ে যেতো প্রলয়কে ঠেকানোর নোংরা কৌশল। ২০০৩ সালে হাজিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি স্বরুপ প্রলয়দা এবং আমি হাজিগঞ্জ উত্তরাঞ্চল সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক যুগ্ম আহ্বায়ক দায়িত্ব পালন করেছি।
তখন খসরু ভাই এবং মাসুম হাসান ফয়সাল হাজিগঞ্জ দক্ষিনাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। মামুন ভাই দুটি ইউনিটের তদারকিতে ছিলেন প্রয়োজন হলেই কেবল মামুন ভাই কোন কোন সম্মেলনে যেতেন। আমরা সকল ইউনিটের সম্মেলন শেষ করে উপজেলা সম্মেলনের প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সম্মেলণের কেবল দিন তারিখ ঠিক হওয়া বাকী ছিলো। হঠাৎ প্রলয়দা এবং আমি হাজিগঞ্জের এক জামায়াত নেতার মেয়ের ঘর পলায়ন মামলার আসামী। যা ছিলো হাজিগঞ্জের ছাত্ররাজনীতির এক কালো অধ্যায়।
আমাদের দুজনের উপর পুলিশি হয়রানি। বাধ্য হয়েই আমি এবং প্রলয়দার প্রায় টানা ১ বছর পলাতক জীবন যাপন। বলাচলে প্রলয়দা সেই থেকে হাজিগঞ্জ ছেড়েছেন যদিও আমি একটা সময় পর এলাকায় ফিরে এসেছি। তবে প্রলয়দার ফিরে না আসার পিছনে প্রলয় দার বড্ড বেশি অভিমানও ছিলো। যে অভিমানটি আমিও করতে পারতাম। কিন্তু আমি করিনি। আর এই অভিমানের কারনটি হয়তো অদৌ কেউ জানেনা। আমরা ওই মামলায় অনেক হয়রানির স্বীকার হয়েছিলাম। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আমরা মামলায় কোর্টে জামিন নিলাম মামলায় নিয়মিত হাজিরার ফাঁকে মামলার বাদী আমাকে প্রলয়দাকে কেন আসামী করেছেন তা জানতে চাইলে তিনি বিস্তারিত জানালেন।
আমরা ওই মামলায় প্রারম্ভিকে এজহার ভুক্ত আসামী ছিলাম না। কিন্তু আমাদের নাম এজাহার ভুক্ত হয়েছে মামলা সাবমিটের ৩/৪ দিন পর। এবং তা হাজিগঞ্জে তৎকালীন কতিপয় আওয়ামী নেতাদের অনুরোধ ক্রমেই নাকি আমাদেরকে আসামী করা হয়েছে। এতদ্ব বিষয়ে আজ বিস্তারিত বলতে চাইনা। আর প্রলয়দা তা যখন জানতে পারলেন সেই থেকেই এই রাজনীতির প্রতি প্রলয় ভদ্রের ঘৃনা এবং অভিমান। কিন্তু একজন প্রলয় ভদ্রকে যারা হাজিগঞ্জে থাকতে দিলনা তারা সাময়িক কিছু সময় ক্ষমতার সুবিধা পেলেও একটা সময় পর তারাও কিন্তু আস্তা কুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
আজ প্রলয় ভদ্রের জন্মদিন। দাদা আপনার শুভ জন্মদিনে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আপনার সাথে আমার স্মৃতিবিজড়িত আড্ডা রাজনৈতিক মাঠে বিচরণ সত্যিই বড্ড মিস্ করি। রাজনৈতিক দূর্বিত্তদের বিরুদ্ধে লড়তে হলে আপনার মতো নেতার বিকল্প নেই। সুযোগ থাকলে দাদা ফিরে আসুন। আপনারা মাঠে আসলে আমি মনে করি আমার মত অপদার্থের অতটা রাজনীতি করার প্রয়োজন হয়তো হবেনা। আপনি যেথায় থাকুন, ভালো থাকুন। সৃষ্টি কর্তা আপনার সহায় হোন।