হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, কিছু স্মৃতি কিছু কথা (শেষ পর্ব)

অধ্যাপক মোজাম্মেল হক চৌধুরী মোহন
আপডেটঃ সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০ | ৮:২৫
অধ্যাপক মোজাম্মেল হক চৌধুরী মোহন
আপডেটঃ সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০ | ৮:২৫
Link Copied!
১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান এর মাঝে আরেকটি অভ্যুত্থান ঘটেছিল হাজীগঞ্জে। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠিত হয় হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ। দুই বছর পরেই ১৯৭১ এর  মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে হাজীগঞ্জ কলেজের ছাত্রদের রয়েছে এক গৌরব গাঁথা ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের ঊষালগ্নে যুদ্ধকে তরান্বিত করার ক্ষেত্রে যারা বিশেষ ভূমিকা পালন করেন, তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম সদস্য হিসেবে দুইবারের ভিপি জামাল উদ্দিন ভুইয়ার ভূমিকা ছিল উল্লেখ করার মত। ভিপি জামাল উদ্দিনের সাথে জিএস ছিলেন পাঁচৈ গ্রামের সিরাজ। মুক্তিযুদ্ধে কলেজের ছাত্রদের মাঝে যারা প্রত্যক্ষ ভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাদের মাঝে নাটেহারার আবুল কালাম, সুলতান আহমেদ, হারুন অর রশিদ, নিখিল চন্দ্র সাহা,দোয়ালিয়ার আবুল কালাম,কমান্ডার মোহন সিরাজ এবং বিএম মহসিন নয়ন (ডেপুটি কমান্ডার) উল্লেখযোগ্য। হাজীগঞ্জ কলেজের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা,প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদন্তি বিএম কলিমুল্লাহর কথা অধ্যাপক মুনতাসির মামুন রচিত ‘চাঁদপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ গ্রন্থে বিশেষভাবে উল্লেখিত রয়েছে। ৮ই ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ স্বাধীন হওয়ার দিন এমএফ বাহিনীর অবস্থান হাজীগঞ্জ কলেজেই ছিল।
আমি যেহেতু একজন শিক্ষক তাই হাজীগঞ্জ কলেজ থেকেই লেখাপড়া করে যারা শিক্ষকতার এই মহান পেশায় আত্ন নিয়োগ করেন তাদের সম্পর্কে কিছু লেখার লোভ সামলাতে পারছি না। এই কলেজের ছাত্রদের মাঝে যারা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাই স্কুল,মাদ্রাসা ও প্রাইমারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন তাদের সম্পর্কে স্মৃতির আয়না থেকে কিছুটা তুলে ধরছি। প্রয়াত অধ্যাপক জহির চৌধুরী, মকিমাবাদের মনির হোসেন, ইংরেজির আবদুল্লাহ শাফি, আবু বকর (অধ্যাপক), দেলোয়ার হোসেন (প্রধান শিক্ষক),বিল্লাল হোসেন (প্রধান শিক্ষক),  ইসমাইল সরদার (প্রধান শিক্ষক),কাজী হাবিবুর রহমান (সহকারী শিক্ষক),রবিউল আউয়াল (সহকারী শিক্ষক),সংকর পাল (সহকারী শিক্ষক), আলেয়া বেগম,বিমল পাল (ডেম), দিপ্তী সাহা, শিবানী আইচ, অঞ্জনা পোদ্দার,প্রদীপ সাহা, সুধীর দেবনাথ, জাহানারা ফেরদৌসী সুইটি, নাসিমা আক্তার, শারমিন আক্তার, আসমা বেগম, মধুসূদন কর্মকার , প্রয়াত শাহ নেওয়াজ (প্রধান শিক্ষক), মাধুরী দেবনাথ (সহকারী শিক্ষক,হাইস্কুল), জসিম উদ্দিন বিএসসি, ঝুমকা দাস(প্রধান শিক্ষক),মজিবর রহমান ( প্রধান শিক্ষক), নাসিমা আক্তার (প্রধান শিক্ষক),জাকির হোসেন জায়েদ(প্রধান শিক্ষক), সাইফুল ইসলাম জুয়েল(প্রধান শিক্ষক), মনির হোসেন(প্রধান শিক্ষক),আছিয়া আক্তার(প্রধান শিক্ষক), আনোয়ার হোসেন (প্রধান শিক্ষক),দীপক সাহা(প্রধান শিক্ষক), নিকুঞ্জ (প্রধান শিক্ষক), শফিকুর রহমান (প্রধান শিক্ষক), শিরিন শামীম (প্রধান শিক্ষক), শামসুন্নাহার সুইটি,মল্লিকা মন্ডল,সমীর, রাজন, এমরান হোসেন, ইব্রাহিম খলিল, হোসনে আয়সা, আবু সাদেক, রোজিনা আক্তার, আশরাফুল আলম, আরমান, শহিদুল্লাহ, ফয়জুন্নেসা,মাহমুদা আক্তার, মিনহাজ, সাকিনা আক্তার,সেলিনা আক্তার,অনিতা সাহা ও তাসরীন আফরোজ (ইভা) অন্যতম। এছাড়াও আরো অনেক প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী কিন্ডারগার্টেন সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে।ইউসিসির ইংরেজির জনপ্রিয় শিক্ষক ইমন হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজেরই ছাত্র।
https://www.popularbdnews.com/?p=5779
আজ কলেজের উপর লিখতে যেয়ে একজনের কথা বারবার হৃদয়ের মানসপটে ভেসে উঠছে।তিনি হাজীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং ব্যাবসায়ী সমিতির প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত হুমায়ুন কবির ভাই।কলেজ রোডে ফিরোজ আইস নামে তার একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। সকাল বিকাল তিনি সেখানে বসতেন।আমাদের আসা যাওয়ার রাস্তাও ছিল এই কলেজ রোড।শিক্ষিত, বিনয়ী ও মার্জিত রুচিবোধের অধিকারী হুমায়ুন ভাই একজন সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। কলেজের শিক্ষকদের সাথে তার সম্পর্ক ছিল চমৎকার। বয়সে তিনি আমার প্রায় ছয় বছরের বড় হলেও তার সাথে আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুর মত। আমি তাকে বড় ভাইয়ের মতই সম্মান করতাম এবং অনেক ক্ষেত্রে আমার একজন অভিভাবক ও মনে করতাম। সিনিয়র শিক্ষকদের ধারাবাহিকতায় অধিকাংশ শিক্ষক আসা যাওয়ার পথে কিছু সময়ের জন্যে হলেও বসার স্থান হিসেবে বেছে নিতেন এই ফিরোজ আইস ফ্যাক্টরি। আর শিক্ষকদের সাথে সুসম্পর্কের পাশাপাশি কিছু আপ্যায়ন করতেও তিনি খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ  করতেন। বড় মনের এই মানুষটির মৃত্যুর পরে আমার মনে হয়েছিল আমার সর্বোচ্চ আপন জনের একজন কে হারালাম। সত্যিই তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের একজন অভিভাবক ও ছিলেন তিনি। আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতবাসী করুক।
https://www.popularbdnews.com/?p=4614
কলেজ থেকে অবসরে এসেছি তাও প্রায় ৫ বছরের অধিক সময়। আজ কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের কথা যদি আমার লেখায় স্থান না পায় তবে তা অনেক ক্ষেত্রেই আমার সংকীর্ণতা প্রকাশ করবে। হেড এসিস্ট্যান্ট খ্যাত প্রয়াত সুবাস চন্দ্র সাহা ছিলেন কলেজের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মচারী। কলেজকে সে প্রানের চেয়েও বেশি ভালোবাসত এবং একাই অনেক বেশি কাজ করার চেষ্টা করত। এতে তার ভুল ও হতো অনেক বেশি। ভালোমন্দ মিশে তার কর্মময় জীবন ছিল উল্লেখযোগ্য। তার কাজের যেমনি প্রশংসা তেমনি সমালোচনাও ছিল। তবে আমার বিবেচনায় কলেজের প্রতি তার দরদ ও আন্তরিকতা ছিল অকৃত্রিম। ১৯৭৯ সালে কলেজে যোগদানের প্রথম দিনই পরিচিত হই মোল্লা নামের একজন কর্মচারীর সাথে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রয়াত আব্দুর রব মজুমদার, নৌকার মাঝি লোপতে আলী, মোহন, রতন দাস, ইসলাম মিয়া, শহিদ, রফিক, সিদ্দিক, জসিম, রেজাউল, শাহাদাত,সুরবালা, মমতাজ ও মিনু সহ অনেককেই কর্মচারী হিসেবে পাই। এদের অনেকে আজ বেঁচে নেই। আব্দুর রব মজুমদার প্রায়শই আমার ক্লাস চলাকালীন সময়ে আমার আলোচনা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে মনোযোগের সহিত শুনতেন। ক্লাস থেকে বের হলে প্রায়শই আমাকে হেসে বলত, ” স্যার, আজকের ক্লাসটা অনেক ভালো হয়েছে আপনার। ভালো লেগেছে আমার।” প্রতুত্তরে আমি কিছু না বলে হেসে চলে আসতাম। নৌকার মাঝি লোপতে আলী ও তার সন্তান মোহনের কথা যদি কিছু না লিখি তাহলে মনে হয় আজকের এই লেখাটাই অপূর্ণ থেকে যাবে।কারণ কলেজে যাতায়াতের এক সময়ে মাধ্যম ছিল নৌকা।সকাল বেলা শতশত ছাত্র ছাত্রী প্রায় একই সময়ে (৯টা-১০টা) কলেজে আসত এবং বিকেল ৩ টা থেকে ৪ টার মাঝে প্রস্থান করত। এই দুটো সময়ে পারাপারের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় লেগে যেত। সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ না থাকলে যেকোন সময়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনারও আশংকা থাকত। কিন্তু কঠিন মনোবলের অধিকারী ছিল নৌকা চালক দুজনই। ঐসময়ে আমি প্রায়ই লক্ষ্য করতাম তারা ছাত্রীদেরকে একত্রে পার করে দিতেন আর ছাত্রদেরকে আলাদা ভাবে। এক্ষেত্রে তাদের ছিল জিরো টলারেন্স। কলেজে যেমন অধ্যক্ষ সাহেব কলেজকে নিয়ন্ত্রণ করেন আর নৌকাঘাটের নিয়ন্ত্রক ছিল বাপ ছেলে দুইজন। রৌদ্রের প্রখরতায় এই দুজন কর্মচারীর গায়ের রং পুড়ে তামাটে হয়ে গিয়েছিল যা আজও চোখে ভাসে। একটি কলেজের ভাবমূর্তি রক্ষায় চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস আজ ও যারা চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হিসেবে কর্মরত তারা তাদের কর্মজীবনে কলেজের প্রতি তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে কলেজের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করবে।
https://www.popularbdnews.com/?p=4146
৩৫ বছরের কর্মজীবনের মাঝে প্রায় ২৫ বছর আমি শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে কলেজ গভার্নিং বডির সদস্য ছিলাম। ১৯৮০ সালে অধ্যক্ষ সুখলাল বাবুর সময়ে আমি প্রথম শিক্ষক প্রতিনিধি এবং অধ্যক্ষ মিহির কান্তি রায়ের সময়ে সর্ব শেষ বারের মত শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হই। এই দীর্ঘ পথচলায় পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত সদস্যবৃন্দের সাথে আমার মেশার সুযোগ হয় এবং তাদের ধ্যানধারণা, চিন্তা চেতনা সম্পর্কেও আমি সম্যক ধারনা পাই৷ জিবি সদস্যদের মাঝে প্রয়াত ডাক্তার আব্দুস সাত্তার এমপি সাহেব থেকে সর্বশেষ সুকু মিয়া পর্যন্ত অনেক সম্মানিত সদস্যবৃন্দের সাথে মিটিংয়ে উপস্থিত থাকার সুযোগ পাই। সম্মানিত অনেক সদস্যের সাথে আমার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সময়ে কলেজের স্বার্থে আন্তরিকতার সহিত আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলাম।  সেই সকল সদস্যের অনেকেই আজ প্রয়াত৷ কিন্তু আজকে এই লেখার সময় একে একে অনেকের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠছে।মজুমদার বাড়ির শামসুল হক মজুমদার, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ জাকির হোসেন মজুমদার, ডাক্তার আব্দুস সাত্তার, জনাব বি এম কলিমুল্লাহ, এডভোকেট তাফাজ্জল হায়দার নসু চৌধুরী, মরহুম আলী আহমদ চেয়ারম্যান, আব্দুল মান্নান খান বাচ্চু,প্রয়াত হেদায়েত হোসেন মুন্সী, কাজী বজলুল হক,নুরুল ইসলাম মজুমদার, ডাক্তার আলী হোসেন মজুমদার, মাহমুদ আহমেদ মিঠু,  আলহাজ্ব আবুল বাশার,মরহুম হাসমত উল্লাহ হাসু ভাই, পালিসারার হেডমাস্টার সেলিম ভাই, আব্দুল মতিন মিয়া (কাজী সাহেব),চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন,আমিন ব্রাদার্স এর আমিন ভাই, মনোয়ার হোসেন মনোয়ার ভাই, চেয়ারম্যান আমির হোসেন, আব্দুল হামিদ মুন্সী সাহেব,সালাহউদ্দিন ফারুক, সুকু ভাই, বিল্লাল মেম্বার ও কমিশনার আকবর হোসেন অন্যতম। হাজীগঞ্জ কলেজের ছাত্র হয়ে যারা বিভিন্ন সময়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ এর সম্মানিত সদস্য হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ফারুক, মাহমুদ আহমেদ মিঠু, জামাল হোসেন,গোলাম ফারুক মুরাদ, এস এম আক্তার হোসেন ও মজিবর রহমান প্রমুখ। জিবি সদস্যদের মাঝে শিক্ষকদের প্রতি একটু বেশি উদার দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন মরহুম হাসমত উল্লাহ হাসু ভাই এবং মনোয়ার হোসেন মনোয়ার ভাই। আবার দু একজন ছিলেন শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষার্থে অনেকটাই অনুদার। বিএম কলিমুল্লাহ হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠার একজন স্বপ্নদ্রষ্টা এবং কলেজের উন্নয়নে এক মহান কারিগর।তার একক প্রচেষ্টায় কলেজ আঙিনায় শিক্ষকদের চারটি বাসস্থান নির্মাণ ছিল এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অর্থ সংক্রান্ত ব্যাপারকে তিনি কখনোই বড় করে দেখতেন না।বরং মহতি উদ্যোগ এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনাকেই তিনি গুরুত্ব দিতেন বেশি। উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সকল সময়ে কলেজের কিছু কিছু উন্নয়ন সরকারি পর্যায়ে আবার কিছু উন্নয়ন কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন হয়েছে৷ তবে হাজীগঞ্জ কলেজের উন্নয়নে প্রাক্তন এমপি এম এ মতিন সাহেবের ভূমিকা যেমনি প্রশংসনীয় তেমনি বর্তমান সাংসদ মেজর রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের ভূমিকাও প্রশংসনীয়। ইতিমধ্যেই একটি চারতলা ভবন সমাপ্ত হয়েছে এবং আরেকটি ভবন নির্মানাধীন। ঐ ভবনটি সম্পন্ন হলে কলেজের বাহ্যিক অবয়ব আরো অনেক বেশি দৃষ্টিনন্দন হবে। যা দেখে এই কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টারা যারা আজ বেঁচে নেই তাদের আত্মাও শান্তি পাবে।
তবে একথাও সত্য যে বাহ্যিক অবয়বই একটি প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতির শেষ কথা নয়। এই প্রতিষ্ঠানটির কাছে এলাকা বাসীর দাবী অনেক। ‘৬৯ এর প্রতিষ্ঠিত কলেজটি আজ পূর্নাঙ্গ ডিগ্রি কলেজে উন্নীত হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। হাজীগঞ্জের মানুষের প্রত্যাশা যেই কলেজটি আজ ডিগ্রী কলেজ নামে চাঁদপুর জেলাবাসীর কাছে সুপরিচিত  সেই কলেজ হতে এখন স্নাতক হওয়া যায়। কিন্তু জনতার দাবী শুধু স্নাতক নয় এই কলেজ থেকে যেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়া যায় সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এখন থেকেই নেওয়া প্রয়োজন।  যথাসময়ে পদক্ষেপ নিতে পারলেই কেবল  সঠিক সময়ে কলেজটি তার অভীষ্ট  লক্ষ্যে পৌছাতে পারবে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পূর্ণ সমর্থন এবং সহযোগিতা থাকবে এ আমার বিশ্বাস। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম জাকির হোসেন মজুমদার কলেজের স্বপ্নদ্রষ্টা মজুমদার পরিবারের প্রান পুরুষ মরহুম সেকান্দার আলী মজুমদার সাহেব এর জ্যেষ্ঠ সন্তান।প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার ডিগ্রি নিয়ে অবৈতনিক প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান ছিল শিক্ষার প্রতি তার গভীর অনুরাগ,  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি মমত্ব এবং এলাকার অনগ্রসর জনগনের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার এক মহান প্রয়াস। তিনি একজন সাদা মনের ও বলিষ্ঠ চিত্তের প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। সাহিত্যের প্রতি তার ছিল গভীর অনুরাগ।মজুমদার পরিবারের ত্যাগের কথা স্মরনে রেখে মরহুম জাকির হোসেন মজুমদারের নামে হাজীগঞ্জ কলেজে যে কোন একটি ভবনের নাম করণ করা এখন সময়ের দাবী। আমার বিশ্বাস, বর্তমান কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারটি আন্তরিকতার সহিত বিবেচনা করবে। পরিশেষে এই লেখার  সমাপ্তির আগে যারা এই কলেজ সৃষ্টির স্বপ্নদ্রষ্টা, প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ এবং যাদের দান অনুদানে আজ এই প্রতিষ্ঠান টি মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মাঝে যারা ইতিমধ্যেই এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে চলে গেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। কলেজ নিয়ে লেখা আমার আজকের এই পর্বই শেষ পর্ব। পঞ্চম পর্ব পর্যন্ত পড়ে যারা আমাকে উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ধারাবাহিকভাবে ‘হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, কিছু স্মৃতি কিছু কথা’  শিরোনামে প্রবন্ধটি প্রকাশ করায়, পপুলার বিডিনিউজ ডটকমকে ধন্যবাদ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
হাজীগঞ্জে জামায়াতের যুব সমাবেশ কচুয়ায় বিশ গ্রামের মুসল্লীদের আয়োজনে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপজেলা প্রকৌশলীর রোষানলে এক ঠিকাদার মাদ্রাসা ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগ মাহফিল সম্পন্ন বাতিঘর মানব কল্যাণ সংস্থার ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে নতুন কমিটি গঠন মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে আমন ধানের সবুজ পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন মতলব উত্তরে পাটের ফলন কম হলেও দামে খুশি কৃষক মানুষটার শরীর দেখে বুয়েটের অবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে : সারজিস বন্যায় হাজীগঞ্জে ৫২ কোটি টাকার ক্ষতি : বেশি ক্ষতি মৎস্য খাতে সেচ্ছাসেবী সংগঠন বাতিঘর মানব কল্যাণ সংস্থার বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মায়া’সহ আ.লীগের পাঁচ নেতার শিল্প প্লট বাতিল হচ্ছে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ চাঁদপুরে ৪ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় আওয়ামীলীগের মামলা কচুয়া থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ এম. আবদুল হালিম বিচারিক ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আসছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ হাজীগঞ্জে আই বি ডব্লিউ এফ সংস্থার সভা  ভারতের বিপক্ষে চাপে থাকাটাই আমাদের জন্য সুবিধাজনক