মানবতার প্রতীক খায়রুল কবির আবাদ

মো. আল আমিন বেপারী
আপডেটঃ আগস্ট ১৮, ২০২০ | ৪:৪৫
মো. আল আমিন বেপারী
আপডেটঃ আগস্ট ১৮, ২০২০ | ৪:৪৫
Link Copied!

প্রথমেই মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া এমন একটি মানুষকে নিয়ে লিখার সৌভাগ্যতা দান করেছেন। খায়রুল কবির আবাদ ভাই এর সাথে কিভাবে পরিচয় হয়েছে সঠিক এখন মনে করতে পারছি না। পরিচয় প্রথম থেকেই বুঝলাম ভাই কিভাবে একটি মানুষকে কাছে টেনে নিতে পারেন হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতে হয়- সেটা শিখতে পেরেছি।

আবাদ ভাই কেমন সেটা যদি ও লিখে প্রকাশ করার ভাষা নেই বা লিখেও তাঁর গুণ, কর্ম, মানবিকতা, মমত্ববোধ সমাজের অসহায় মানুষের জন্য কেমন সেটা বুঝানোর মত ভাষা পৃথিবীর কোনো ডিকশোনারীতে এমন শব্দ খুঁজে পাওয়া যাবে না কিনা আমার জানা নাই।

আমি যখন হাজীগঞ্জ আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনী ভর্ত হয়েছি। তখন থেকে কিছু দরিদ্র ছাত্রছাত্রী ও অভিবাবকদের মুখে আবাদ ভাই এর নাম জেনেছি।তখনো উপলদ্ধি করতে পারিনি এই মানুষটি কে? যখন আমি নবম শ্রেনী উঠি তখন আবাদ ভাই আমাদের স্কুলের গভিং বডির সভাপতি হিসাবে নিবাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

সেই থেকে স্কুলের ব্যাপক উন্নয়ন করেন বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্র। আমিন মেমোরিয়াল স্কুলে বোর্ড পরীক্ষার কেন্দ্র ছিলো না তিনিই প্রথম বোর্ড পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রদের জন্য ল্যাব করেন। একটি কম্পিটার ক্লাব করেন।

তিনি শুধু শিক্ষা খাতে উন্নয়ন করেননি অবকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন যে কথা গুলো না লিখলেই নয় স্কুলে মেয়েদের বাথরুম ছিলো না, তিনি তার উন্নয়ন করেছেন। স্কুলের যে বর্তমান নতুন ভবন টি হয়েছে তাও তাঁর আমলেই অনুমোদন করিয়েছেন। তাঁর আগে পরের কোনো সভাপতি থেকেই স্কুলের কোনো ছাত্রছাত্রী কিছু নতুন কিছু পেয়েছে বলে মনে হয়নি।

শিক্ষাখাত, অবকাঠামোগত সব উন্নয়নই তাঁর আমলেই হয়েছে। আমি কারো সমোলচনা করছি না, আমি স্কুলের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে যা বাস্তবে দেখেছি তাই বলেছি। এইবার আসি স্কুলের উপবৃত্তি নিয়ে ছেলেদের জন্য কোনো উপবৃত্তি ছিলোই না, তিনি পরিবারের একটা ট্রাষ্ট কল্যাণ থেকে অনেক মেধাবী দরিদ্র ছাত্রদের বৃত্তি ব্যবস্থা করেছেন। একটি কথা না বললেই নয়, আমার এক বন্ধুর বাবা মারা যাওয়ার কারণে তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে। তার রোল ১-৫ এর ভিতরে ছিলো। আমার মেধাবী বন্ধুকে আবাদ ভাই এর পরিবারের ওই ট্রাস্ট থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা পর্ন্ত বিনামুল্য স্কুলে পড়ার ব্যবস্থা করেছেন। এই রকম শুধু আমার বন্ধু যে বৃত্তি সহযোগিতার পেয়েছেন তা কিন্তু নয় আমার পরিচিত, পরিচিত অনেক ছাত্র কে বিনামুল্য এস.এস.সি পর্ন্ত পড়ার ব্যবস্থা করেছেন ।যে ছাত্র লেখাপড়ার দায়িত্ব পিতা মাতার নেওয়ার কথা ছিলো তিনি দায়িত্ব নিয়ে পিতা মাতার ভুমিকা পালন করেছেন বটবৃক্ষের মত ছায়া হয়ে ছিলেন। শুধু কি তিনি আমিন মেমোরিয়াল স্কুলের জন্যই করেছেন না তিনি হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য আরো অবদান রেখেছেন।

টাকার অভাবে ঢাকা মেডিকেলে,ময়মনসিংহ মেডিকেল ভর্ হতে পারে নি, তিনি ভর্র পুরো টাকা দিয়ে ভর্ করিয়ে দিয়েছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেমন ঢাবি, রাবি, জাবি চবি, কুবি সহ অসংখক ছাত্রছাত্রীদের অর্থ দিয়ে ভর্তি করেছেন যা আমার নিজ চোখের দেখা।
এই করোনায় মহামরিতে দরিদ্র কৃষকদের ধান কাটতে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। মসজিদেরর উন্নয়নে অনেক সহযোগিতা করেছেন। আমি তো মাত্র কয়েক বছরে নিজ চোখে দেখেছি। করোনার এই মহামারির ও ভাই গোপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আবাদ ভাই যেমন মানবিক মানুষ তেমনি একজন দক্ষ ও নিষ্ঠাবান সংগঠক ও তিনি হাজীগঞ্জে অনেক গুলো সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্টিত করেছেন। যে কোনো মানবিক ও সামাজিক কাজে ভাই এর কাছে গিয়েছি তত বারই সাধ্যমত সহযোগিতা করেছেন। শুধু সহযোগিতাই করেন না তিনি পরিচয়টা পর্যন্ত প্রকাশ করতে কঠোর ভাবে নিষেধ করেন। সবশেষ সামাজিক কাজের অর্ন্তভুক্ত পাঠাগারেরর জন্য সহযোগিতা চেয়েছি- আলহামদুল্লিাহ সেকাজেও ভাই এর সহযোগিতা থাকছে।

বিজ্ঞাপন

একনজরে দেখুন খায়রুল কবির আবাদ ভাই আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে যা যা করেছেন-
১. হিসাব সংরক্ষণ। কিছু অনৈতিক খরচ বাতিল করা। যেমন আপ্যায়ন, কমিটির লোকজনকে খাওয়ানো ও পুরস্কার প্রদান।
২. মেয়েদের জন্য সেফটি ট্যাংক সহ আলাদা বাথরুম করা।
৩. বিদ্যালয়ের নিজস্ব খাতে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ।
৪. ঘুষ ব্যাতিত চারজন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক নিয়োগ।
৫. শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের ছাত্র ছাত্রী দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তদারকি করা।
৬. এসএসসি এবং জেএসসি স্থায়ী পরিক্ষা কেন্দ্র বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন করিয়ে শুরু করানো।
৭. বিজ্ঞানাগার ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন।
৮. বিদ্যালয়ের নিজস্ব টাকায় দোতলায় দুটি পাকা ক্লাশ রুম নিরমান।
৭. নতুন ভবন ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও কাজ শুরু। যা এখন চার তলা ভবনে উন্নতি।
৮. স্কুলের উত্তর দিকে তিনটি ক্লাশ রুম নতুন করা বিদ্যালয়ের নিজস্ব টাকায়।
৯. এসএসসি ও জেএসসি পরিক্ষায় ফলাফল উপজেলায় প্রথম কয়েকটির মধ্যে উন্নতি করণ।
১০. স্থানীয় সাংসদকে প্রথম দুই বার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনয়ণ।
১১. বিধি মোতাবেক প্রতিমাসে একটি করে কমিটির সভা করা। আপ্যায়ন খরচ সম্পুর্ন নিজে বহন করা।
১২. শিক্ষকদের বাড়িতে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করিয়ে স্কুলের মাধ্যমে ক্লাশে অতিরিক্ত পাঠদান। সামান্য অতিরিক্ত ফি নিয়ে।
১৩. মিধাত উদ্দিন আহমেদ ও বেগম ছালেহা খাতুন স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বৃত্তি প্রদান।
১৪. মান্নান কোল্ড স্টোরেজ দ্বারা বৃত্তি প্রবর্তন।
ইত্যাদি ইত্যাদি।

খায়রুল কবির আবাদ ভাইয়ের মতো সমাজে এমন মানবতার প্রতীক থাকলে মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজ মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। তরুণ সমাজ দেশ ও সমাজকে বিকশিত করতে উৎসাহ পাবে। আমরা খায়রুল কবির আবাদ ভাইয়ের কাছ থেকে তেমনটা পেয়ে আসছি। জয় হোক মানবতার। বেঁচে থাকুক মানবতার প্রতীকের মানুষগুলো।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
এইচএসসি পরীক্ষার ফল ১৫-১৭ অক্টোবরের মধ্যে বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই নতুন রেকর্ড গড়লেন জ্যোতি ‘আয়নাঘরের’ প্রমাণ পেয়েছে গুম কমিশন, জমা পড়েছে ৪০০ অভিযোগ দুই দিনের বৃষ্টিতে হাজীগঞ্জে জলাবদ্ধতা বাংলাদেশের আগামীর গর্ব হামজা : ফিফা অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ২ বছর চান ৫৩ শতাংশ ভোটার: জরিপ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ টাকা চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩০ লাভের অংশ নির্ধারণ করে টাকা বিনিয়োগ করা জায়েজ? গণত্রাণের ৮ কোটি টাকা যাচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হাজীগঞ্জে দুর্গাপূজায় যে সব প্রস্তুতি প্রসাশনের মতলবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : একজন গুলিবিদ্ধ হাজীগঞ্জে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ  অক্টোবরে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, আছে বন্যার শঙ্কা ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরামের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ মতলব দক্ষিণে নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে আ.লীগ নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার চাকরি হারালেন জ্যোতিকা জ্যোতি হাজীগঞ্জে দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নে জামায়াতের কর্মী সম্মেলন ‘আড়াই’ দিনের টেস্টেও বাংলাদেশের হার