একটি ক্লু লেছ মামলার রহস্য উদঘাঠনের গল্প
গত ৩১/০৭/২০২০ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার অত্র থানাধীন বড়হায়াতপুর সাকিনের সৌদি আরব প্রবাসী মোঃ হানিফ মিয়ার কন্যা স্থানীয় সাদিপুর চাঁদপুর এম.এ খালেক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল নাঈম মিশু (১৪) দুপুর অনুমান ১২:২০ ঘটিকার সময় (জুম্মার নামাজের আগ মুর্হুতে) তাহার পালিত ছাগলের জন্য ঘাস কাটার উদ্দেশ্যে একটি বড় এ্যালমোনিয়ামের বোল ও ঘাস কাটার কাঁচি নিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া তাহার বাড়ীর পূর্ব দক্ষিন পাশের ধান ক্ষেত বিশিষ্ট বুক সমান পানির বিলে যায়। ঐদিন বিকাল অনুমান ০২:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত মৃত জান্নাতুল নাঈম বাড়ী ফিরে না আসায় ভিকটিমের পরিবারের লোকজন সহ স্থানীয় লোকজন তাহাকে বিলের মধ্যে খুজতে থাকে। উক্ত সাংবাদটি থানায় প্রাপ্ত হইয়া কচুয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল বড়হায়াতপুর বিলে গমন করেন এবং থানা পুলিশ সহ স্থানীয় লোকজন বিল ও আশপাশ এলাকায় ব্যাপক তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করিয়া ভিকটিমের বাড়ী হইতে নিয়া যাওয়া এ্যালমোনিয়ামের বোল, ঘাস কাটার কাচি ও তাহার গায়ের ওড়না পাওয়া গেলেও ভিকটিমকে কোথায় পাওয়া যায় নাই্ । ঘটনাস্থল হইতে পুলিশ অফিসার থানায় আসিয়া এ বিষয়ে একটি জিডি করেন এবং তদন্ত অব্যাহত সহ সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের গতিবিধি উপর নজরদারী রাখা হয়। পরবর্তীতে ০১/০৮/২০২০ ইং তারিখ ভিকটিমের মামা জনৈক ইকবাল হোসেন (৩৫) থানায় আসিয়া কচুয়া থানার নিখোজ ডায়রী নং- ১২ মুলে ডায়রীভুক্ত করেন। ঈদের দিন হওয়া সত্ত্বেও আমি এবং পুলিশ পরিদশক (তদন্ত) ও নিখোঁজ ডায়রীর তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই (নিঃ) মোঃ মকবুল সংঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থল বড়হায়াতপুর বিলে গমন করি এবং বিল ও আশপাশ এলাকায় পুনরায় তল্লাশি সহ সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের গতিবিধির উপর নজরদারী অব্যাহত রাখিয়া তদন্ত করিতে থাকি। পরবর্তীতে ০২/০৮/২০২০ তারিখ সংবাদ পাই যে, কচুয়া থানাধীন বড়হায়াতপুর সাকিনস্থ ভিকটিম জানাতুল নাঈম মিশুর বাড়ীর দক্ষিন পূর্ব কোনে বিলের দক্ষিন পার্শ্বে জমি সংলগ্ন খালের পানিতে নিখোঁজ মিশুর লাশ ভাসিতেছে। তখন দ্রুত আমি সহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যাই এবং লাশ বিলের পানি হইতে উত্তোলন করিয়া পাড়ে্ এনে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ মৃত্যুর সঠিক কারন নির্নয় করার জন্য মৃতা মিশুর লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করিয়া তদন্ত অব্যাহত সহ সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের গতিবিধির উপর নজরদারী জোরদার রাখি। ইং ০৩/০৮/২০২০ তারিখ ভিকটিম জান্নতুল নাঈম মিশুর মাতা মোসাঃ ফাতেমা বেগম @ শেফালী বাদী হইয়া এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করিলে কচুয়া থানার মামলা নং- ০২ তারিখঃ ০৩/০৮/২০২০ ইং ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করি। আমি সহ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই (নিঃ) মোঃ মকবুল হোসেন তাৎক্ষনিক মামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং পূর্বের রুজুকৃত জিডির তদন্তের ধারাবাহিকতায় সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের গতিবিধির বিবেচনা করিয়া এবং মামলার এজাহার পরবর্তী সন্দিগ্ধ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চালাই। বিশ্বস্ত গুপ্তচরের মাধ্যমে অত্র ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সন্দিগ্ধ আসামী ১। মোঃ নুর আলম @ নুরা (২৫) পিতা- মনির হোসেন, মাতা- নার্গিস বেগম, সাং- বড়হায়াতপুর (নতুন বাড়ী) থানা- কচুয়া, জেলা- চাঁদপুর ২। মোঃ সজিব হোসেন (১৯) পিতা- আমির হোসেন, মাতা- রহিমা বেগম, স্থায়ী সাং- গাব্দেরগাও (ঢালী বাড়ী) থানা- ফরিদগঞ্জ, জেলা- চাঁদপুর বর্তমানে- নানারী বাড়ী সাং- বড় হায়াতপুর (নতুন বাড়ী) নানা- মোঃ দেলোয়ার হোসেন, পালিত পিতা- মোঃ সেলিম, থানা- কচুয়া, জেলা- চাঁদপুরদ্বয়কে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গ্রেফতার করিতে সক্ষম হই। গ্রেফতারের বিষয়টি তাৎক্ষনিক জেলা পুলিশ সুপার জনাব, মাহবুবর রহমান, পিপিএম (বার) মহোদয় সহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) জনাব, আব্দুর রহিম, এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কচুয়া সার্কেল জনাব, আফজাল হোসেন মহোদয়গনকে অবহিত পূবক পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় আসামীদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। আসামীদ্বয় খুব ধুরত প্রকৃতির বিধায় বিভিন্ন কুট কৌশল অবলম্বন করার একপর্যায়ে তাহারা প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে। ধৃত আসামী সজিব (১৯) এই ঘটনার বিস্তারিত ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরে। অদ্য আসামীদ্বয়কে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন পূবক ০১ জনের ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহন করা হয় এবং অন্যজনকে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করা হয়। সুষ্ট ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলার বিষয়টি গভীর তদন্ত অব্যাহত আছে। উক্ত মামলার তদন্তকাযক্রম এই পযন্ত চলমান থাকাকালীন সময়ে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় সহ অন্যান্য কমকর্তাদের সহযোগীতা স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ জনসাধারনের সহযোগীতা, এবং মিডিয়া কর্মীদের সহযোগীতার জন্য আমি মোঃ ওয়ালী উল্লাহ, অফিসার ইনচাজ, কচুয়া থানা, চাঁদপুর আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। উল্লেখ্য যে, অদ্য অত্র বিষয়ে প্রেস বিফিং করা হয়েছে।(চলবে)।