করোনাকালে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ীদের শত কোটি টাকার ক্ষতি
চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ বাজার। ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র বলে খ্যাত এই বাজার। এই বাজারে প্রায় ২৮০০ দোকানী ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেরাও পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলছেন। এই ভয়াল করোনার থাবায় পুরো বাজারে শতকোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। করোনার প্রার্দুভাব বাড়তে থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
হাজীগঞ্জ বাজারকে কেন্দ্র করে এলাকায় মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়ে উঠেছে বহুতল ভবনসহ আবাসিক-অনাবাসিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া চাঁদপুর জেলার পাশাপাশি হাজীগঞ্জ বাজারকে সমৃদ্ধ করে চলেছেন লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলার ক্রেতাগণ।
কিভাবে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে জানতে চাইলে হাজীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান বলেন, করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে হবে। এটা হল তাদের প্রথম কাজ। দ্বিতীয়তঃ হলো ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হলে মালিকপক্ষ মানবিক হয়ে সুবিধা মতো ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে এবং ব্যবসায়ী ও মালিকপক্ষ মুনাফালোভী হতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, বেঁচে থাকার জন্য কর্মের প্রয়োজন। কিন্তু এতে মালিকপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা সমন্বয় করে ভাড়া নির্ধারণ করলে এই করোনায় কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবু রুহি দাস বণিক বলেন, এই করোনাকালীন সময়ে ব্যবসায়ীদের শতকোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ক্রেতারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। তা না হলে শতাধিক ব্যবসায়ীরা অতি দ্রুত হাজীগঞ্জ বাজারের থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে ভাড়া ও ব্যাংক ঋণের জন্য হাজীগঞ্জ বাজারে শিগগির দোকান- মার্কেট এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।
হাজীগঞ্জ বাজারের গাউছিয়ায হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের পরিচালক কাওছার হোসেন লিটন বলেন, প্রতিটি দোকানে প্রতিমাসে দোকান ভাড়া ও বিভিন্ন কর্মচারীর বেতন সহ মাসে হাজার হাজার টাকা ব্যায় আছে। তিনমাসে এভাবে সব দোকানে দেড় শত কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে ধারণা করছি। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমার খরচ প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা বহন করতে হচ্ছে। এভাবে বাজারের প্রত্যেকটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিমাসেই ক্ষতির সম্মুখীন এর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হলে শীঘ্রই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতনতা বজায় রেখে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে হবে।
হাজীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইঞ্জি. নিশান রহমান বলেন, করোনাকালীন সময়ে মার্কেট থেকে ভাড়া উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে বাজারে প্রত্যেকটি মার্কেটে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আর এই ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকা বেশি হবে বলে ধারণা করেন তিনি।
হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হায়দার পারভেজ সুজন বলেন, হাজীগঞ্জ বাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২৮০০ দোকান রয়েছে । এই দোকান গুলোর বেশির ভাগই ভাড়াটিয়া ও উপভাড়াটিয়া রয়েছে। করোনাকালীন সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত খুলতে না পারায় তারা প্রতিমাসে ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা মালিকপক্ষকে ভাড়া কমানোর জন্য প্রস্তাবনা রেখেছি।
এছাড়া তিনি জানান, হাজীগঞ্জ বাজারের কিছু ব্যবসায়ীর তালিকা করে জনবান্ধব সাংসদ মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তমের কাছে প্রণোদনার জন্য প্রেরণ করবো।