বাড়তে পারে দেশে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন!
দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনার প্রকোপ। প্রতিদিন রেকর্ড হারে দেশে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে পুনরায় সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের কথা চিন্তা-ভাবনা করবে সরকার। এ জন্য আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সবকিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানান, এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও শ্রমজীবী, গরিব, খেটে খাওয়া, স্বল্প আয়ের মানুষের জীবিকা এবং দেশের অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে ও ভয়ঙ্কর পর্যায়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে অন্য কোনো উপায় থাকবে না। বাধ্য হয়ে পুনরায় সাধারণ ছুটি ও লকডাউন দেওয়া হবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এমন সিদ্ধান্তই রয়েছে। তারা জানান, এই সময়ে করোনা সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা বোঝার জন্য পরীক্ষা আরও বাড়ানো হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে ওই নীতিনির্ধারকরা জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আগামী এক সপ্তাহ কঠোরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। সংক্রমণের এই মাত্রা আরও বাড়লে পুনরায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা ও লকডাউন দিয়ে তা কার্যকর করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সোমবার (০১ জুন) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, ‘আমাদের অসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতি যদি আরও অবনতি হয় এবং তা যদি জনস্বার্থের বিপরীতে চলে যায়, তাহলে সরকারকে বাধ্য হয়ে আবারো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটা চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে। এই সময়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দেখা হবে। এর পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এমন নয়। ১৫ দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনগণ ও দেশের কথা চিন্তা করে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এদিকে নোভেল করোনা ভাইরাসে মঙ্গলবার (০২ জুন) আক্রান্ত হয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক। সর্বমোট আক্রান্ত ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর আাগে গত রোববার (৩১ মে) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার হিসেবে ওই দিন ২ হাজার ৫৪৫ জন রোগী শনাক্ত এবং ৪০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো সাত নম্বরে। এর পর দিন তুলনামূলক কম হলেও এক দিন পরই আবার আক্রান্ত ও মৃত্যু লফিয়ে বেড়েছে। সোমবার ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৩৮১ জন আর মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। আর মঙ্গলবার (০২ জুন) আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯১১ জন। মৃত্যু ৩৭ জনের। এখন পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্ত ৫২ হাজার ৪৪৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭০৯ জনের।