মাকে নিয়ে গিরীশ গৈরিকের এক গুচ্ছ কবিতা
মা
আমার মা এক মৃন্মময়ী বৃক্ষ
তার জীবিত শরীর জুড়ে উইপোকার বসবাস
আমি সেই বৃক্ষে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে গেঁথে আছি
আর টের পাচ্ছি- বিশাক্ত কামড়ের জ্বালা।
অথচ- উইপোকারা জানে না
আমাদের কাঠ থেকে তৈরি হবে ম্যাচবাক্সের কাঠি।
মা
শহরের বাড়িগুলো খুব পাশাপাশি
অথচ- ভেতরের মানুষগুলো অনেক দূরে দূরে বসবাস করে।
তাই আমার মা কোনোদিন শহরের অধিবাসী হতে পারেনি।
সে এখন গ্রামে বসে- প্রতিভোরে গোবর দিয়ে উঠান পবিত্র করেন;
পূজায় বসেন
পূজা শেষ করে খোঁজ নেন- হাঁসমুরগিগুলো কোথায় কেমন আছে।
লাউয়ের ডগা আর কতো বড় হলে- মাচাটা কতোটুকু করতে হবে।
আমি শত শত পথ দূরে থেকেও মায়ের এসব কাজ দেখতে পাই
আর শুনতে পাই- মা আমাকে কখন কী বলছেন।
যেমন করে শত শব্দের ভিড়েও বাসের ড্রাইভার-
হেলপারের কথা শুনতে পায়।
মা
সেবার তো আমার মৃত্যু চৌরাস্তার মোড়ে ঘুরছিলো
চৌরাস্তা থেকে কোন দিকে গেলে আমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে
সেসব নকশা মৃত্যুর কাছে না থাকায় বিভ্রান্ত হচ্ছিল।
মৃত্যু যখন তার করাল গ্রাসে আমাকে সাব্যস্ত করবে
ঠিক তখনি আমার মা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন :
আমার ছেলেকে নিতে হলে তার আগে আমাকে নিতে হবে।
অবশেষে মৃত্যু মাকে প্রণাম করে দৌড়ে পালালো।