আম্ফান বাংলাদেশে বড় ধরনের বিধ্বংস চালানোর আশঙ্কা

পপুলার বিডিনিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ মে ১৯, ২০২০ | ৭:০২
পপুলার বিডিনিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ মে ১৯, ২০২০ | ৭:০২
Link Copied!

লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ, নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ। তিন ধাপ পেরিয়ে চতুর্থ ধাপে পা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে অতি প্রবল শক্তিশালী এই আম্ফান বুধবার ভোরের দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদেরা। সোমবার দুপুরের পর থেকেই দেশের ১৪টি জেলা ও সকল সমুদ্রবন্দরগুলোকে হুঁশিয়ারি সংকেত সরিয়ে ৭ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল আবহাওয়া অধিদফতরের ২৩ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, অতি প্রবল শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

সেখানে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এটি আরও প্রবলভাবে ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল কিংবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঠিক এক বছর আগে ‘ফণী’র তাণ্ডবে তছনছ হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। এবার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে? এ বিষয়ে ধারণা দিতে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান অতি প্রবল শক্তি নিয়ে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এ ধরনের ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট হয়।’

ঘূর্ণিঝড়ে মূলত দুই ধরনের ক্ষতি হয়। প্রথমত প্রাণহানি আর দ্বিতীয় ঘরবাড়ি ও গবাদি পশুর ক্ষতি। আম্ফান মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে এরইমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, উপকূলীয় জেলাসমূহের জেলা প্রশাসক, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ স্কাউটস ও সিপিবি-এর মধ্যে বৈঠক হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরাও উপকূলীয় এলাকায় জনসচেতনামূলক কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

ত্রাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে এবার সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হবে। প্রতিটি এলাকার কাছাকাছি স্থাপনাগুলোও প্রস্তুত করা হচ্ছে। কারা কোনও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকবে সেটিও তালিকা হচ্ছে।

আপাতভাবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানকে ‘প্রবল’ বলা হলেও আঘাত হানার সময় এটি ‘অতি প্রবল’ সাইক্লোনে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালি, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালি, ফেনী, চট্টগ্রাম- এই ১৪টি জেলাকে ৭ নম্বর বিপদসংক দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি খুলনা, মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। বুলেটিনে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

মহামারি কারোনা ভাইরাসে বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি যেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেখানে হঠাৎ সম্ভাব্য সাইক্লোন কতটা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে? করোনা আতঙ্কের মধ্যেই এমন প্রশ্ন উঁকি দিতে শুরু করেছে জনমনে। আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, আম্ফান বাংলাদেশে বড় ধরনের বিধ্বংস চালাবে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। মানুষের প্রাণহানি থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি, গাছপালা, গবাদি পশু ও রাস্তাঘাটের বড় ক্ষতি হতে পারে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বিদ্যুৎ সরবরাহও। কারণ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানার সময় বাসাতে এটির গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৬৫-১৭০ কিলোমিটার কিংবা তারও উপরে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশে অতীতের তুলনায় বর্তমানে প্রাণহানির সংখ্যা কিছুটা কমেছে। ১৯৭০ সালের ভোলা সাইক্লোনে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ২০০৭ সালে সিডরের আঘাতে ৩ হাজার ৪০৬ জনের প্রাণহানি হয়। এরপরেও আরও বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে দেশে। এর মধ্যে ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার আঘাতে ১৯০ জন ও ২০১৩ সালে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়। সবশেষ গেল বছর মে মাসের শুরুর দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডবেও দেশে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
মতলবের চরাঞ্চলে ঝুঁকি নিয়ে মেঘনা পারি দিচ্ছে হাজারও মানুষ কুমিল্লা’সহ দেশের ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের শঙ্কা হামলার অভিযোগে মতলব উত্তরের আ. লীগ নেতা’সহ ২০৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা সারাদেশে দুই লাখ আনসার মোতায়েন হচ্ছে দেশে এখন নির্বাচনের চেয়ে সংস্কার জরুরি: জামায়াত প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে বসেছে বিএনপি টানা বৃষ্টিতে ফের ডুবছে নোয়াখালী, পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ হাজীগঞ্জে শিক্ষক দিবসে আলোচনা সভা ও র‌্যালি হাজীগঞ্জে দুর্গাপূজা উপলক্ষে মতবিনিময় সভা মোংলায় ১০ গ্রেড বাস্তবায়নে শিক্ষকদের মানববন্ধন  কচুয়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  চাঁদপুরে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, হাসপাতালে ভর্তি অর্ধশত  টানা বৃষ্টিতে হাজীগঞ্জে জলাবদ্ধতায় পানি বন্দি মানুষ  চাঁদপুরে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড, জেলাজুড়ে জলাবদ্ধতা হাজীগঞ্জে বিদ্যুতায়িত হয়ে রাজমিস্ত্রির মৃত্যু কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু ব্যারিস্টার টিপুকে হত্যা চেষ্টায় মতলব উত্তরে সাবেক মন্ত্রী পুত্র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা ফরিদগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৮ শিক্ষার্থীকে পাঠদান দিচ্ছে একজন শিক্ষক দ্বারা! বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণ