যে কারণে মূর্খ ও অশিক্ষিতরাও ‘সাংবাদিকতা’ পেশায়

এম সুজন আকন
আপডেটঃ জুন ২৪, ২০২০ | ১:২৪
এম সুজন আকন
আপডেটঃ জুন ২৪, ২০২০ | ১:২৪
Link Copied!

সম্প্রতি আমার গ্রামের এক ছোট ভাই এসে বললো, ‘ভাই আপনিতো সাংবাদিকতায় কাজ করেন, আমাকে একটা সাংবাদিকতার কার্ড করে দেন’। সেদিন আমার খুব লজ্জা আর ক্ষোভ জমেছিলো মনে। এই পেশাটা কি এতটাই সহজ যে যিনি এসএসসি পাসও করেনি তিনি আমাকে বলে বসলেন, একটা সাংবাদিকতার কার্ড করে দিন। একটা আইডি কার্ড থাকলেই কি ‘সাংবাদিক’ হওয়া যায়? সাংবাদিকতা করতে কি কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নেই?

মনে ক্ষোভ নিয়ে গ্রামের ছোট ভাইকে বললাম- ‘কোন অ্যাডভোকেটের কাছে গিয়েছিলে তুমি? তাকে বলেছিলে যে, ভাই আমাকে একটা কার্ড করে দেন, ‘ওকালতি’ করবো। এত পেশা থাকতে সাংবাদিকতা কেন তোমার পছন্দ?’ উদাহরণ টেনে সে বলে- ‘অনেকেই তো করেন এটা! কিছু টাকা খরচ করে কার্ড করেছে, এখন তিনিও তো সাংবাদিক!’

বুঝতে আর বাকি রইলো না ব্যর্থতা আমাদেরও রয়েছে, যাই হোক বুঝিয়ে বললাম ‘ভাই আগে পড়ালেখা শেষ করো, সাংবাদিকতা করতে চাইলে আগে এ বিষয়ে জানো। তারপর এ পেশায় এসো।’ মূর্খদের সাংবাদিকতায় আসার পেছনে শুধু সিনিয়র সাংবাদিকদেরই আমি দায়ি করবো না, এখানে মিডিয়ার মালিক কর্তৃপক্ষও কম দায়ি নয়।

বিজ্ঞাপন

ইদানিং অনেক টিভি কর্তৃপক্ষকে দেখা যায়, বহু ‘টেকনিক’ শিখে গেছেন তারা। প্রথম শ্রেণির টিভি চ্যানেলগুলো এক জেলায় একজন ‘জেলা প্রতিনিধি’ নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এবং তারা যতটুকু সম্ভব বেতন ভাতাও দেন। কিন্তু কিছু ভুঁইফোড় ‘টিভি চ্যানেল’ প্রতিটি জেলায় দুই থেকে চারজনও প্রতিনিধি নিয়োগ দিচ্ছে। উপজেলা প্রতিনিধি তো আছেই।

তারা ইতোমধ্যেই জেলা প্রতিনিধি (উত্তর), জেলা প্রতিনিধি (দক্ষিণ) ও জেলা সদর প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে আসছেন। হয়তো আগামীতে তারা জেলা প্রতিনিধি (পশ্চিম), জেলা প্রতিনিধি (পূর্ব), জেলা প্রতিনিধি (উত্তর কোণ), জেলা প্রতিনিধি (দক্ষিণ কোণ), জেলা প্রতিনিধি (পশ্চিম কোণ), জেলা প্রতিনিধি (পূর্ব কোণ), জেলা প্রতিনিধি (স্পেশাল), জেলা প্রতিনিধি (স্টাফ), জেলা প্রতিনিধি (ক্রাইম), জেলা প্রতিনিধি (ব্যুারো) সহ আরো কত যে পদে নিয়োগ দেবেন তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।

এই যে বিভিন্ন পদে তারা জেলা-উপজেলায় নিয়োগ দিচ্ছেন তাদের কি শুধু শুধুই নিয়োগ দিচ্ছেন? আপনি হয়তো জানেন না। তবে আমি নিশ্চিত তারা কিন্তু বিনে পয়সায় নিয়োগকর্ম চালায় না। প্রথম শ্রেণির টিভি চ্যানেলের মত তাদের আবার বেতন ভাতা দেয়ার ঝামেলাও নেই।

বিজ্ঞাপন

নিয়োগ দিয়ে শুধু একটাই উপদেশ তারা দেন তা হলো- ‘নাও আর যাও। বাবা, কামাই করে খাও’। এসব নিয়োগ বাণিজ্য হয়তো মফস্বলের সিনিয়র সাংবাদিকদের থামানোর ক্ষমতা নাও থাকতে পারে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে তাদের করণীয় কি?

আমি মনে করি প্রতিটি জেলা-উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিকদেরই এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের সকল সংগঠনকে এক হয়ে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। না হলে হয়তো মফস্বল সাংবাদিকতাও কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালালসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

লেখক-
সহ-সম্পাদক- দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ। কলামিস্ট-সাংবাদিক ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

ট্যাগ:

শীর্ষ সংবাদ:
‘মিঠা পানিতে ইলিশকে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে হবে’ দুষ্কৃতিকারীরা রাতে বিদ্যুৎ না থাকার সময়টা বেছে নেন: জেলা প্রশাসক শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো: তানভীর হুদা  এইচএসসি ও সমমানের ফল ১৫ অক্টোবর চাঁদপুরে অবৈধ অস্ত্র’সহ পাঁচ সন্ত্রাসী গ্রেফতার  সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মা ইলিশ রক্ষা করতে হবে: জেলা প্রশাসক বিশ্বের শীর্ষ ৫০ প্রভাবশালী মুসলিমের তালিকায় ড. ইউনূস মতলব উত্তরে সম্প্রতি সমাবেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবেনা: জেলা প্রশাসক আলাউদ্দিন আরিফ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মনোনীত হয়েছেন  হাজীগঞ্জে ২৯ মন্ডপে হবে দুর্গাপূজা: সভা মঙ্গলবার  অস্ট্রেলিয়ায় সন্তান নিহত হলেও বাবা-মা জানেন হাসপাতালে ভর্তি কচুয়ায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দুই যুবকের যাবজ্জীবন প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাময়িক বরখাস্ত সড়ক এখন মরণ ফাঁদ! আমড়া নাকি জাম্বুরা, কোনটি বেশি উপকারী চাঁদপুরে ৪০ টাকায় বিখ্যাত ওয়ান মিনিটের আইসক্রিম ৮-৩১ অক্টোবর তিন পার্বত্য জেলা ভ্রমণে বিরত থাকার নির্দেশ আন্দোলনে নিহত ১০৫ শিশুর পরিবার ৫০ হাজার টাকা করে পাবে: শারমিন মুরশিদ কচুয়ায় জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত  হাজীগঞ্জে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসে আলোচনা সভা